আমি যদি চাকরি না করতুম, আর বাঁধাধরা কোন কাজের গণ্ডির মধ্যে বাঁধা না থাকতুম, তাহলে আমি হয়তো অন্য অনেক কিছু করতে পারতুম। তাতে অবশ্য খাবার জুটতো কিনা নিশ্চিত করে বলতে পারি না ;তবে মনের আর প্রাণের ইচ্ছের বিকাশের একটা রাস্তা খুঁজে পেতুম নিশ্চিত। সারাদিন ইচ্ছেকে ভাসিয়ে দিতুম ডানায়, কখনো সে কবিতা লিখত, কখনো বা ছবি আঁকতো। দেয়ালে আজগুবি নকশা করতো বা হারমোনিয়ামে গলা সাধতো। এর পরেও অবশ্য অনেক সময় থেকে যেত নিজের শখ, পরিবারের শখ মেটানোর জন্য ।মেয়েকে ,ছেলেকে সময় দিতে পারতুম, খেলতুম নতুন নতুন খেলা ,মনের মত করে তাদের গড়তে পারতুম।বৌকেও সময় দিতুম অনেক, অনেক গল্প মজা করে, সংসার আনন্দে ভরে যেত। নিজের ভুলগুলো শুধরে নিতেও পারতুম। ভুলতো কতই করি ,আসলে সময় চাই, সময়। নিজেকে বদলে ফেলার জন্য। মোড়ক বদল আরকি ।চাকরি না করলে বা অবসরে জীবন কাটালে অন্যান্য কিছু অসুবিধাও হতো ঠিকই, তবে প্রাণশক্তিটা বাড়তো, আকাশ -বাতাস- পৃথিবী -প্রকৃতির সুখটুকু উপভোগ করে নিতে পারতুম। কেন জানিনা সেটা হবার নয়।কে যে এই নিয়মখানা করেছে, তাকে বড় দুষতে ইচ্ছে হয় ।সময়টাই আসলে আলাদা।কোথাও মানুষ উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সেইদিনের খাবারটা জোগাবে বলে ;আবার কোথাও আরও বড় সাম্রাজ্য, আরও বড় প্রাসাদের মালিক হবে বলে। কিন্তু মানুষ বড় বেশি সময়ের দাস। সময়কে বাগে রাখতে পারিনা আমরা -সেই অক্ষমতার কোন ক্ষমা নেই। সে বড় অসহায়তা -একমাত্র মৃত্যুতেই বোধ হয় তার শেষ।কিন্তু পৃথিবী একদিন ছিল না,একদিন থাকবেও না।কোথায় রইবে কোটি কোটি জীবনের এই সব ইতিহাস,ভাসমান দ্রুতপ্রসারিত মহাবিশ্বে?
No comments:
Post a Comment