পুজোর আর সপ্তা তিনেক বাকি।আজই বোনাসের টাকা পেয়েছি । টাকা তো নয়,যেন ভিক্ষা। এবারে আর আট পার্সেন্ট দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল কোম্পানি,কোথায় জানি কি সব লস হয়ে গেছে। মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ঠেকাল,একেবারেই সব আশায় জল ঢেলে দিয়ে ।এই ক’টা টাকায় বউ ,ছেলে আর মেয়ের চাহিদা মিটবে না। কয়েকজন নিকটাত্মীয়কে দেওয়া-থোওয়ারও ব্যাপার আছে। কি যে হবে? মনটা অস্বস্তিতে ভরে গেল।দু’দিন আগেই বউ-মেয়ের সঙ্গে বসে হাজার বারোর মত একখানা তালিকা তৈরি হয়েছিল ।এর চেয়ে কমে আর কিছুতেই করা যায়নি ।এখন সবার জন্য কি কিনব,কি বাদ দেব,কি'করেই বা খরচে কুলোব, ভাবতে বসলুম।
এক ভয়াবহ সমস্যা মানুষের এই চাহিদা ,এই জন্যই পৃথিবীতে এত অরাজকতা, এত দুরবস্থা ।চাহিদার তুলনায় রোজগার কম।ইকনমিক্সে যাকে বলে ইনইকুয়ালিটি। দেশের দশ শতাংশ মানুষের কাছেই নব্বই শতাংশ সম্পদ।ছিঃ।
নিজের জন্য অনেক কিছু কমাতে হবে ।গতবারে নিজের একটা জামা-প্যান্ট আর বউয়ের একটা কম দামী শাড়ি হয়েছিল ।এছাড়াও বাচ্চাদের আব্দার আবারও না মেনে কমেসমে কিসব হয়েছিল। এবার সবার আব্দার মেনে, আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হবে বলে ভেবেছিলুম, সব আশা ভেস্তে গেল। এদিকে সবাই তো কত আশায় বুক বেঁধে, আমার দিকেই চেয়ে বসে আছে। তাছাড়া জামাকাপড়ের যা দাম। একই জিনিস ভোল পাল্টে দ্বিগুণ দামে আসছে।
ভয়ে ভয়ে,দুগ্গা দুগ্গা ব’লে,দোকানে গেলুম সকলকে নিয়ে ।মেয়ে খুব বুদ্ধিমতী, কিন্তু ছোট ছেলেটা কি এসব বুঝবে? ছেলে-মেয়ের অপছন্দ করা পোশাক কিনতেই প্রায় সব টাকা চলে গেল ।শেষে গেঞ্জি জুতো চটি এসব কিনতে গিয়ে মাইনের টাকাতেও হাত পড়ে গেল। যা হয় হোক, দরাদরী করে বউয়ের একটা শাড়ি মোটা টাকায় রফা হল । নিজের জন্য একটা প্যান্ট পিসও কেনা হল ।মেয়ে পড়তে যায়, ভাল ছাতা নেই,একটা কিনতেই হল ।নিজের জন্যও একটা কিনলুম ।বউয়ের অনিচ্ছাসত্ত্বেও একরকম জোর করেই ইমিটেশন চুড়ি,হার,দূল কিনেছি। বউয়ের পরার গয়না নেই। যেগুলো আছে তাদেরও খোঁজ পাওয়া যাবে বন্ধকীর দোকানে। জোরাজুরি করে এক জোড়া রূপোর দূলও কেনা হল ,ছেলের আবদারে ভিডিও গেম।মাইনের টাকাও প্রায় শেষ হয়ে এল ।এবার মেয়ের অনেকদিনের বায়না চুড়িদার ।দাম পড়ল আশাতীত, দোকানীর সঙ্গে ঝগড়া লাগে লাগে।টাকা পয়সা শেষ করে সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়ি ফিরলুম। তবুও আজ আমার বড় সুখ। মনের মত করে খরচ করা গেছে। অনেকদিন পরে মিটেছে সকলের চাহিদা, তা সে যেমনই হোক। কিন্তু বাকি মাসটা কিভাবে চলবে? নতুন জামা প্যান্ট জুতোর বাক্সের গন্ধ শুঁকে? ইকোনমিক্সে একেই বোধহয় বলে বাজেট ডেফিশিয়েন্সি।
রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেল ফেরিওয়ালা "বাআআআসোওওওন"।শাড়ির বদলে বাসন বিক্রি। শুনেছি ,এসব হাতফেরত জামাকাপড়ের আলাদা মার্কেট আছে। গরীব মানুষরাই নিশ্চয়ই এর ক্রেতা। পাশের গলি থেকে একটা ক্ষীণ কন্ঠ ভেসে আসল ।কেউ যেন ভিক্ষা চাইছে। কান পেতে কথাগুলো শুনলুম। চোখটা গ্লিসারিনে ভিজে গেছে মনে হল। বিরক্তিতে চোখ দুটো মুছে ফেললুম।
মনে মনে ঠিক করলুম, মা আসুক। ষষ্ঠীর দিন ভোরেই আদ্দিকালের পাঞ্জাবিটা পরেই মার সামনে গিয়ে করজোড়ে অভিযোগ জানাব। ‘মা সবার সব চাহিদা মিটিয়ে দাও মা।‘
এক ভয়াবহ সমস্যা মানুষের এই চাহিদা ,এই জন্যই পৃথিবীতে এত অরাজকতা, এত দুরবস্থা ।চাহিদার তুলনায় রোজগার কম।ইকনমিক্সে যাকে বলে ইনইকুয়ালিটি। দেশের দশ শতাংশ মানুষের কাছেই নব্বই শতাংশ সম্পদ।ছিঃ।
নিজের জন্য অনেক কিছু কমাতে হবে ।গতবারে নিজের একটা জামা-প্যান্ট আর বউয়ের একটা কম দামী শাড়ি হয়েছিল ।এছাড়াও বাচ্চাদের আব্দার আবারও না মেনে কমেসমে কিসব হয়েছিল। এবার সবার আব্দার মেনে, আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হবে বলে ভেবেছিলুম, সব আশা ভেস্তে গেল। এদিকে সবাই তো কত আশায় বুক বেঁধে, আমার দিকেই চেয়ে বসে আছে। তাছাড়া জামাকাপড়ের যা দাম। একই জিনিস ভোল পাল্টে দ্বিগুণ দামে আসছে।
ভয়ে ভয়ে,দুগ্গা দুগ্গা ব’লে,দোকানে গেলুম সকলকে নিয়ে ।মেয়ে খুব বুদ্ধিমতী, কিন্তু ছোট ছেলেটা কি এসব বুঝবে? ছেলে-মেয়ের অপছন্দ করা পোশাক কিনতেই প্রায় সব টাকা চলে গেল ।শেষে গেঞ্জি জুতো চটি এসব কিনতে গিয়ে মাইনের টাকাতেও হাত পড়ে গেল। যা হয় হোক, দরাদরী করে বউয়ের একটা শাড়ি মোটা টাকায় রফা হল । নিজের জন্য একটা প্যান্ট পিসও কেনা হল ।মেয়ে পড়তে যায়, ভাল ছাতা নেই,একটা কিনতেই হল ।নিজের জন্যও একটা কিনলুম ।বউয়ের অনিচ্ছাসত্ত্বেও একরকম জোর করেই ইমিটেশন চুড়ি,হার,দূল কিনেছি। বউয়ের পরার গয়না নেই। যেগুলো আছে তাদেরও খোঁজ পাওয়া যাবে বন্ধকীর দোকানে। জোরাজুরি করে এক জোড়া রূপোর দূলও কেনা হল ,ছেলের আবদারে ভিডিও গেম।মাইনের টাকাও প্রায় শেষ হয়ে এল ।এবার মেয়ের অনেকদিনের বায়না চুড়িদার ।দাম পড়ল আশাতীত, দোকানীর সঙ্গে ঝগড়া লাগে লাগে।টাকা পয়সা শেষ করে সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়ি ফিরলুম। তবুও আজ আমার বড় সুখ। মনের মত করে খরচ করা গেছে। অনেকদিন পরে মিটেছে সকলের চাহিদা, তা সে যেমনই হোক। কিন্তু বাকি মাসটা কিভাবে চলবে? নতুন জামা প্যান্ট জুতোর বাক্সের গন্ধ শুঁকে? ইকোনমিক্সে একেই বোধহয় বলে বাজেট ডেফিশিয়েন্সি।
রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেল ফেরিওয়ালা "বাআআআসোওওওন"।শাড়ির বদলে বাসন বিক্রি। শুনেছি ,এসব হাতফেরত জামাকাপড়ের আলাদা মার্কেট আছে। গরীব মানুষরাই নিশ্চয়ই এর ক্রেতা। পাশের গলি থেকে একটা ক্ষীণ কন্ঠ ভেসে আসল ।কেউ যেন ভিক্ষা চাইছে। কান পেতে কথাগুলো শুনলুম। চোখটা গ্লিসারিনে ভিজে গেছে মনে হল। বিরক্তিতে চোখ দুটো মুছে ফেললুম।
মনে মনে ঠিক করলুম, মা আসুক। ষষ্ঠীর দিন ভোরেই আদ্দিকালের পাঞ্জাবিটা পরেই মার সামনে গিয়ে করজোড়ে অভিযোগ জানাব। ‘মা সবার সব চাহিদা মিটিয়ে দাও মা।‘