21 May 2021

আমি তো মরেই যাবো

বিশ বছর আগে, বাংলাদেশের নেত্রকোনায় ফরমান শেখের উত্থান ছিল সিনেমার মতো। চুরি করতে গিয়ে প্রথমে ধরা পড়লে, ওর বাবা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে,, একদিন ও চলে গেল রেলস্টেশনে। সেখানে কুলি হিসেবে কিছুদিন কাজ করল। তারপর ধীরে ধীরে মদ জুয়া মারপিট নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল। রেললাইনের স্টিলের পাত চুরি করেও বিক্রি করত। খুব স্পিডে বাইক চালাতে বলে এলাকার নাম হয়েছিল 'ধুমচোরা'। ফরমান এলাকায় ওর সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে রামদা বাহিনী বলে একটা দল বানাল, তারা রাম দা নিয়ে নেত্রকোনা রেলস্টেশন ও ঘাট এলাকায় চুরি-ডাকাতি, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম করে বেড়াত। গোটা এলাকা তখন ওর কথাতেই চলত। ফরমানের ছিল প্রচন্ড উচ্চাশা আর ভাগ্যও ছিল সহায়। ওর রকেট গতিতে উত্থানের সেই শুরু। পরের বছর ও রাজনীতিতেও পা রাখল। এলাকা দখল করে ওর প্রভাব-প্রতিপত্তি দ্রুত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল। দল বদলে বদলে ও ক্ষমতা ধরে রাখত, আর ছিল ওর অদম্য জেদ। যে ওর পথে বাধা হয়ে আসত, তাকে সরিয়ে দিতে ও দু'বার ভাবত না। ওর কুখ্যাত সিরিয়াল কিলিংয়েরও সেই শুরু। প্রথমে ও নিজের বাড়িতে ডেকে এনে ওরই সাকরেদ সাজিদকে খুন করল, যে ওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। বডিটা বাগানে পুঁতে দিল, কেউ কিছু জানতে পারেনি। খুন করতে ওর বেশ ভাল লাগতে শুরু করল, নেশার মতো হয়ে দাঁড়াল। কিছু দিন পরে ফরমান বুঝল ওর একটা আন্ডারওয়ার্ল্ড আস্তানা দরকার। সেলিম চাচার বরফকলে গিয়ে ও সেলিমচাচাকে ভয় দেখিয়ে বরফকলটা খুব অল্প টাকায় কিনে নিল। কার ক্ষমতা ওর মুখের উপর কথা বলে? সবাই মুখ বুঁজে ওর অত্যাচার মেনে নিত। এরপর থেকে ফরমানের খুনখারাপি আরো বেড়ে গেল। কারো সঙ্গে একটু বনিবনা না হলেই সে খুন হয়ে। যেত আর তার লাশ খুঁজে পাওয়া যেত না। সিরিয়াল কিলার ফরমান শেখের ভয়াবহ আর নৃশংস হত্যাকান্ডের নানা রোমাঞ্চকর কথা জানতে গেলে গল্পটা পুরোটা পড়তে হবে।

No comments:

Post a Comment