21 May 2021

বুকে আয় বোন

দিল্লিতে ট্রানস্ফার হয়ে যাবার পরে, কাজের প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও, বাড়ি ফিরে অক্সিজেন যোগাত রাত-দিনের কাজের লোক জাকিরচাচার সঙ্গ। চাচার গল্পের ভাঁড়ার অফুরন্ত। এরকমই এক অদ্ভুত গল্প জাকিরচাচার মুখ থেকে শোনা গেল। ওদেরই পাড়ায় আফতাব বলে একটি ছেলের দুঃখজনক ঘটনা। আফতাবের ওর বোন সেলিনাকে ভীষণ ভালবাসত, দুজনে ছিল একে-অপরের চোখের মনি। সেই সেলিনাকে আফতাবেরই এক বন্ধু নাজিম ধর্ষণ করল। সেলিনা অপমানে আত্মঘাতী হল। আফতাব প্রতিশোধের আগুনে ফুটতে লাগল। কি এমন প্রতিশোধ, যা তাকে এক শান্ত সাদাসিধা ছেলে থেকে এক ভয়ঙ্কর খুনিতে পরিণত করল? জানতে গেলে পড়তে হবে ভাই-বোনের ভালবাসার এবং বিচ্ছেদের এক চরম পরিনতির দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে লেখা গল্পটা।

অ্যালিবাই

দিব্যেন্দু ব্যানার্জি একজন মাঝারি মাপের ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট ছিলেন। তার স্ত্রী শতরূপাকে নিয়ে তিনি শান্তিতেই ছিলেন। যদিও মিনমিনে প্রকৃতির মানুষ,কারো সঙ্গে বেশি মিশতেন না, কিন্তু সপ্তাহে একদিন ক্লাবে যেতেন বিলিয়ার্ড খেলতে। সেরকমই এক শীতের রাতে হঠাৎ বিনা মেঘে বজ্রপাত হল। শতরূপার মৃতদেহ পাওয়া গেল তারই রান্নাঘরে। ভারী কিছু দিয়ে বারবার আঘাত করে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। দিব্যেন্দুবাবু তখন বাড়িতে ছিলেন না, তার যথেষ্ট অ্যালিবাই ছিল। অনেকেই তাকে সে সময় ক্লাবে দেখেছি। ঘটনার আগের দিনই তিনি অফিস স্টাফেদের মাইনে দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা তুলে এনে নিজের কাছে রেখেছিলেন। রান্নাঘরে এক গোপন লকারে সেটা রাখা ছিল। সেই টাকাটাও লকার ভেঙে ডাকাতি হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কোন সূত্র পেল না। জানা গেল খুনটা হয়েছে সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টা থেকে আটটার মধ্যে। আশেপাশের বাড়ি থেকেও কেউ কেউ কিছু বলতে পারল না। কেউ আততায়ীকে দেখেনি, কোন শব্দ বা চিৎকারও শোনেনি। পুলিশ ইন্সপেক্টর রাঘববাবু কোনরকম কূল-কিণারা না পেয়ে শেষে গোয়েন্দা সৌরনীলকে ফোন করলেন। সৌরনীল তদন্তে জানতে পারল, সেদিন সন্ধ্যায় দিব্যেন্দুবাবু ক্লাবে পৌঁছানোর আগে, দেবদত্ত সেন বলে একজন তার খোঁজে ফোন করেছিলেন। ওনার মোবাইলে পাচ্ছিলেন না, তাই ক্লাবের ফোনে ফোন করেছিলেন। একটা মেসেজ দিতে। দেশপ্রাণ শাসমল রোডের এক ঠিকানায়, যেন দিব্যেন্দুবাবু ব্যবসার জরুরী দরকারে, অবশ্যই ওনার সঙ্গে দেখা করেন। বিলিয়ার্ড রুমের ম্যানেজার দিব্যেন্দুবাবু আসতে সেটা জানিয়েও ছিলেন। দিব্যেন্দুবাবু অবাক হয়ে বলেছিলেন, 'দেবদত্ত সেন? এ আবার কে? চিনি না তো।' শতরূপাকে একা রেখে দিব্যেন্দুবাবু বাড়ি থেকে সচরাচর বের হতেন না। সেদিনও বেরোবার আগে তিনি বলেছিলেন, 'অপরিচিত কাউকে দরজা খুলো না, সাবধানে থেকো। পাড়ায় চুরি-ডাকাতি খুব হচ্ছে ক'দিন ধরে।' শতরূপা বলেছিল, 'হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক আছে। তুমি নিশ্চিন্তে যাও।' দিব্যেন্দুবাবু ক্লাবে চলে গেলেন, সেখান থেকে কাছে বলে ওই ঠিকানাটা খুঁজতেও একবার বেরোলেন, কিন্তু খুঁজে পেলেন না। দিব্যেন্দুবাবু ফিরে এলেন। সৌরনীল ঘড়ি ধরে সব মিলিয়ে দেখল তার প্রতিটা কথা সত্যি। সুতরাং ওনার পরিস্কার অ্যালিবাই আছে। কিন্তু দেবদত্ত সেন সেজে দিব্যেন্দুবাবুই ফোনটা ক্লাবে করেননি তো? তারপর ঠিকানা খোঁজার নাম করে নিজের বাড়িতে ফিরে এসে শতরূপাকে...। সন্দেহটা গেল না। এরপরে শতরূপা হত্যা রহস্যের বাকিটুকু জানতে হলে টানটান উত্তেজনার গল্পটা পড়তেই হবে।

সিল্কের কাপড়

কুটে ছিল এক সাদামাটা চোর, রাতে ছিঁচকে চুরি করে বেড়াত। থাকত শোভাবাজারের আনন্দ লেনে একটা টিনের ঝুপড়িতে। পাশেই থাকত পচা, সে বড় মাপের ওয়াগণ ব্রেকার ছিল, কিন্তু কুটের অত সাহস ছিল না। 'কি দরকার বাবা, শুনেছি গুলিটুলিও চলে।', ও বলত। 'দুর, রিস্ক না নিলে লাইফে পয়সা আসবে কোত্থেকে? আমার কামাইটাও দেখ।', পচা বলত। 'আমার অত পয়সা চাইনা। একা মানুষ ।' 'তোর জীবনে কোন উন্নতি হল না।' এই কুটের জীবনই হঠাৎ একদিন আমূল বদলে গেল। একদিন মুরগির লড়াই দেখে, মেথরপট্টির সামনে দিয়ে ফেরার সময়, হরেক মাল দশ টাকার একটা ঠেলা যেতে দেখে, ওর চোখ আটকে গেল ঠেলায় ঝোলানো অদ্ভুত একটা ফুটতিনেক লম্বা হলুদ রঙের সিল্কের কাপড়ের দিকে। যেটার একদিকে আবার গিঁট দেওয়া। কুটে বুঝতে পারল, এটা কোন সাধারণ কাপড়ের টুকরো নয়। এটা ঠগীদের ফাঁস দেওয়ার কাপড়, যেটা দিয়ে দুশো বছর আগে তারা পথিকদের খুন করে সবকিছু কেড়ে নিত। কুটে সিল্কের কাপড়টা কিনে ফেলল আর তারপর সোনাগাছিতে শেফালি বলে যে মাগির বাড়িতে মাঝেমধ্যেই যেত, সেখানে চলে গেল। শেফালির সঙ্গে ওর ইদানিং প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হচ্ছিল, অন্য একটা উঠতি মেয়ের দিকে কুটে ঝুঁকেছিল বলে। সেবারও শেফালির সঙ্গে সারারাত জগড়া ঝাটি হবার পরে, ভোরবেলায় সব শান্ত হয়ে গেল। বেলার দিকে মালকিন বুড়িদি শেফালির ঘরের দরজা ঠেলে খুলতেই, অবাক হয়ে গেল। ঘরে কুটে নেই আর বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে আছে শেফালি। তার গলায় একটা হলুদ রুমাল শক্ত করে বাঁধা। বুড়িদি চিৎকার করে উঠল। পুলিশ কুটের খোঁজে চারিদিকে তোলপাড় করে ফেলতে লাগল। কুটে তখন পালিয়ে গেল মানিকতলার বস্তিতে। সেখানেই তার সঙ্গে আবার দেখা হয়ে গেল শেফালির প্রেতাত্মার। কি হল তারপর? শেফালির প্রেতাত্মা কি কুটের ওপর প্রতিশোধ নিতে এসেছিল? জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা।

অভিশপ্ত বাড়ি

সন্দীপ-ছন্দা কেষ্টপুরে একটা পুরনো বাড়ি কিনল। মালিক অনিমেষ সরকার একা মানুষ,বিয়ে থা করেননি। ওনার বাবা-মা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে পাকাপাকি চলে যাবার পরে, তিনিও এই বাড়িটা বিক্রি করে দিয়ে কোথায় চলে গেলেন। কিন্তু বাড়িটায় বড় অযত্নের ছাপ, বড় নোংরা চারিদিক, কোন মেনটেনেন্স নেই। ধীরেন বলে পাশের চায়ের দোকানের একটা ছেলেকে দিয়ে, একতলাটা পরিষ্কার করাতে গেল ওরা। হঠাৎই রান্নাঘরে সব নোংরা সরিয়ে, দেওয়ালে লাগানো ঐকটা ওয়ালপেপারের কোনটা উঠে যেতেই, সেটা আলগা হয়ে খুলে গেল। বেরিয়ে পড়ল একটা কাঠের দরজা। ঔদিকে কী আছে, কোন গুপ্তঘর? ততটা জায়গাই বা কোথায়? ওরা অবাক হল। শেষে দরজা ভেঙে ওরা গুপ্তধনের লোভে ঘরে ঢুকল। ঘর তো নয় একটা সরু প্যাসেজ, ওপাশের ঘরের মধ্যে একটা ফলস ওয়াল তুলে এটাকে আলাদা করে রাখা হয়েছে, কেউ জানতেও পারতো না ওয়ালপেপারটা না খুলে গেলে। ভেতরে ঢুকতেই বোঁটকা গন্ধ, দেখা গেল পরপর সাজানো রয়েছে ছ-ছটা ট্রাঙ্ক। কি আছে ট্রাঙ্কগুলার ভেতর? টাকা পয়সা, ধনরত্ন, গুপ্তধন? বীরেন একটার তালা ভেঙে খুলে ফেলল। আর তক্ষুনি ভক্ করে একটা পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল গোটা ঘরময়। ভেতরে শোয়ানো রয়েছে এক মহিলার পচা গলা সিমেন্টে জমানো ডেডবডি। পুলিশ এসে উদ্ধার করল ছ- ছটা এরকম ডেডবডি সবই কম বয়সী মহিলাদের। চেপেচুপে ঢুকিয়ে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছিল খুনগুলো বেশ কিছুদিন আগে করা হয়েছে। বাগানে সন্দেহের বশে খোঁড়াখঁড়ি করতে গিয়ে, বেরিয়ে এল আরো দুটো লাশ।বাড়ির মালিক অনিমেষ সরকারের খোঁজে পুলিশ চারিদিকে হন্যে হয়ে ঘুরতে লাগল। তারপর কি হল? অনিমেষ কি ধরা পড়ল? এই সিরিয়াল কিলার রহস্যের পুরোটা জানতে গেলে, পড়তে হবে গল্পটা।

জয়দেববাবুর মাফলার

জয়দেববাবু একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে অ্যাকাউন্টেন্টের কাজ করতেন। সাধারণ বিকম পাস, তিনতলার অফিসের ঘরে আলো-বাতাস সেরকম ঢুকত না। কম্পিউটার আর ফাইলে মুখ গুঁজে জয়দেববাবুর দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল। হঠাৎ মালিক প্রকাশ আগরওয়াল ওকে দেখে পাঠালেন। কিছু পুরনো অ্যাকাউন্টের হিসাব মিলছে না। জয়দেববাবু জানতেন মালিকের ছেলে হেমন্ত আগরওয়াল প্রায়ই কোনরকম রিসিট ছাড়াই কিছু কিছু টাকা সরাত, আর শোধ করত না। বেশ কিছু টাকা নানা কায়দায় নিজের অ্যাকাউন্টেও সরিয়ে নিত, কিন্তু তার হিসাবপত্র দিত না। সেই অ্যাকাউন্টের ব্যাপারেই জয়দেববাবুকে আগরওয়াল সাহেব প্রচন্ড বকাঝকা করলেন। অ্যাকাউন্টের হিসাবটা না মেলাতে পারলে, জয়দেববাবুর মাইনে থেকেই সব টাকা কেটে নেওয়া হবে। শুনে তো জয়দেববাবুর রাতের ঘুম চলে গেল, এতগুলো টাকা তো তার গলায় ফাঁস হয়ে বসবে! তিনি কি সারা জীবনেও শোধ করতে পারবেন? শেষে মাইনেটা শূন্য হয়ে দাঁড়াবে, খাবেন কি? সাদাসিধা চুপচাপ জয়দেববাবু মালিকের এই অন্যায়ের কোন প্রতিবাদ করতে পারলেন না। বিরস বদনে পরের দিন অফিসে যেতেই, ছোট মালিক হেমন্ত আগরওয়ালও তাকে ফোন করে হুমকি দিতে লাগলেন। 'আমার নামে কমপ্লেন করলে আপনার কি অবস্থা হবে বুঝতে পারছেন তো? চুপচাপ হিসাবটা মিলিয়ে দিন, না হলে কিন্তু আমার অনেক গুন্ডা আছে, বন্দুকও আছে।' হেমন্তর হুমকি শুনে জয়দেববাবু হতবুদ্ধি হয়ে গেলেন। জয়দেব বাবু এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেলেন কি? কী হল তারপরে? রোমহর্ষক গল্পটা বাকিটা পড়তেই হবে।

ঐশী অন্তর্ধান রহস্য

ঐশীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওর মা থানায় এসে নিখোঁজ ডায়েরি লেখান। গত ছ'মাসেও ঐশী ওনাকে ফোন করেনি ও মোবাইলও সুইচড অফ। জামাই বলেছে ঐশী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে, আর ফিরবে না। ঐশির মা এও জানালেন যে জামাইয়ের কাজকর্ম বেশ সন্দেহজনক। তবে ঐশী ছোটবেলা থেকেই খুব জেদী, একগুঁয়ে টাইপের মেয়ে ছিল। দুনিয়ার পরোয়া করত না। নতুন নতুন বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়াত। ওর বাবা ছোটবেলাতেই মারা যেতে, মা সমস্ত ভালবাসা ওকে ঢেলে দিয়েছিলেন। যখন যা চাইত তাই পেত, টাকা-পয়সা উপহার কোন কিছুর অভাব ছিল না ওর। এই প্রশ্রয়েই ঐশী লাগামছাড়া অসামাজিক কাজকর্ম করতে শুরু করল। ছোটবেলা থেকে এদিক-ওদিক মাঝে মাঝেই দু-তিন দিনের জন্য উধাও হয়ে যেত। হঠাৎ একদিন ওর এক সহপাঠীকে বিয়েও করে ফেলল, আবার কদিন পরে ছাড়াছাড়িও হয়ে গেল। বেশ কিছুদিন এইসব চালাবার পর ঐশী অবশেষে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার সুরঞ্জনকে বিয়ে করে থিতু হল। সুরঞ্জনবাবুর বিশাল ক্ষমতা, পার্টি পুলিশ মন্ত্রী সব হাতের মুঠোয়। তার প্রথম পক্ষের বউও ছিল। ডায়মন্ড হারবার রোডে নিরালা বলে বিশাল বাংলায় সুরঞ্জন আর ঐশী থাকত। কিন্তু কোথায় গেল ঐশী? রাঘববাবু সৌরদীপকে ডেকে পাঠালেন। প্রায় ছ'মাস খোঁজ নেই, বেশিরভাগ সূত্রই এতদিনে হারিয়ে গেছে বা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যখন সুরঞ্জনবাবুর নামে অভিযোগ জমা পড়েছে এবং মিসিং ডায়েরি হয়েছে তদন্ত তো করতেই হবে। সুরঞ্জনকে বাজিয়ে দেখতে সৌরদীপ গেল 'নিরালা'য়। কোথায় গেল ঐশী? কে ছিল এই অপরাধের পেছনে? সে কি ধরা পড়ল? জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা।

আমি তো মরেই যাবো

বিশ বছর আগে, বাংলাদেশের নেত্রকোনায় ফরমান শেখের উত্থান ছিল সিনেমার মতো। চুরি করতে গিয়ে প্রথমে ধরা পড়লে, ওর বাবা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে,, একদিন ও চলে গেল রেলস্টেশনে। সেখানে কুলি হিসেবে কিছুদিন কাজ করল। তারপর ধীরে ধীরে মদ জুয়া মারপিট নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল। রেললাইনের স্টিলের পাত চুরি করেও বিক্রি করত। খুব স্পিডে বাইক চালাতে বলে এলাকার নাম হয়েছিল 'ধুমচোরা'। ফরমান এলাকায় ওর সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে রামদা বাহিনী বলে একটা দল বানাল, তারা রাম দা নিয়ে নেত্রকোনা রেলস্টেশন ও ঘাট এলাকায় চুরি-ডাকাতি, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম করে বেড়াত। গোটা এলাকা তখন ওর কথাতেই চলত। ফরমানের ছিল প্রচন্ড উচ্চাশা আর ভাগ্যও ছিল সহায়। ওর রকেট গতিতে উত্থানের সেই শুরু। পরের বছর ও রাজনীতিতেও পা রাখল। এলাকা দখল করে ওর প্রভাব-প্রতিপত্তি দ্রুত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল। দল বদলে বদলে ও ক্ষমতা ধরে রাখত, আর ছিল ওর অদম্য জেদ। যে ওর পথে বাধা হয়ে আসত, তাকে সরিয়ে দিতে ও দু'বার ভাবত না। ওর কুখ্যাত সিরিয়াল কিলিংয়েরও সেই শুরু। প্রথমে ও নিজের বাড়িতে ডেকে এনে ওরই সাকরেদ সাজিদকে খুন করল, যে ওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। বডিটা বাগানে পুঁতে দিল, কেউ কিছু জানতে পারেনি। খুন করতে ওর বেশ ভাল লাগতে শুরু করল, নেশার মতো হয়ে দাঁড়াল। কিছু দিন পরে ফরমান বুঝল ওর একটা আন্ডারওয়ার্ল্ড আস্তানা দরকার। সেলিম চাচার বরফকলে গিয়ে ও সেলিমচাচাকে ভয় দেখিয়ে বরফকলটা খুব অল্প টাকায় কিনে নিল। কার ক্ষমতা ওর মুখের উপর কথা বলে? সবাই মুখ বুঁজে ওর অত্যাচার মেনে নিত। এরপর থেকে ফরমানের খুনখারাপি আরো বেড়ে গেল। কারো সঙ্গে একটু বনিবনা না হলেই সে খুন হয়ে। যেত আর তার লাশ খুঁজে পাওয়া যেত না। সিরিয়াল কিলার ফরমান শেখের ভয়াবহ আর নৃশংস হত্যাকান্ডের নানা রোমাঞ্চকর কথা জানতে গেলে গল্পটা পুরোটা পড়তে হবে।

18 May 2021

উর্মী কোথায়

দুর্জয় সামন্ত রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় একদম ফুলে ফেঁপে উঠেছিলেন। তার ওপর তিনি ছিলেন এলাকার একজন ডাকসাইটে নেতা, রুলিং পার্টির খুব কাছের লোক। এলাকায় তিনিই ছিলেন ছোট-বড় সব বিষয়ে একদম শেষ কথা। সেদিন পুজো কমিটির কিছু জরুরী মিটিং সেরে রাত ন'টা নাগাদ দুর্জয়বাবু এক লোহা কারবারীর ডিনারের নেমন্তন্ন রাখতে গেলেন। ড্রাইভারকে বললেন তাড়াতাড়ি চালাতে, আর বেশি সময় নেই। দশ মিনিটেই ওরা পৌঁছে গেলেন পার্টিতে। পৌঁছতেই দুর্জয় বাবুর মোবাইলে একটা ফোন এল। ওর স্ত্রী উর্মী ফোন করেছে। 'কি করছ? কখন ফিরবে?', সেই একই প্রশ্ন। স্ত্রীকে খুব মান্য করেন দুর্জয়বাবু। বাড়িতে দুটো ছোট বাচ্চাও রয়েছে। তাদেরকে নিয়ে উর্মি একাই রয়েছে। দুর্জয়বাবু জানিয়ে দিলেন, 'এই তো, একটু বাদেই ফিরছি।' 'তাড়াতাড়ি ফিরো।' 'কেন বলতো? সব ঠিক আছে তো?' 'সব ঠিক আছে, তুমি কোথায়?' 'এই তো একটা পার্টিতে।' 'ও তাই নাকি? আমাকে মিস করছ না?' দুর্জয়বাবু হেসে ফোনটা রেখে দিয়েছিলেন। এই ছিল দুজনের শেষ কথাবার্তা। দুর্জয়বাবু কখনোই গিন্নি আর বাচ্চাদের বাড়িতে একা ছেড়ে বেশি রাত করে বাড়ি ফিরতেন না। যতই ব্যবসার কাজ বা রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল থাকুক না কেন। রাত আটটার পর তিনি পারতপক্ষে বাড়িতে থাকতেন না। তার কারণ হল, বছর দুয়েক আগে তার বাড়িতে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। তারপর থেকে উনি সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন। কি ছিল সেই ঘটনা? কি ঘটল উর্মির সঙ্গে? বাকিটা জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা

ছদ্মবেশী

প্রায় দুশো বছর আগেকার কথা জার্মানির নুরেমবার্গ শহরে হঠাৎ একটা অপরিচিত বাচ্চা ছেলে রাস্তা দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, হয়তো কোন চোট-আঘাত পেয়েছে। অনেকক্ষণ উদ্দেশ্যহীন হাঁটাহাঁটি করার পরে, ছেলেটা পরিশ্রান্ত হয়ে রাস্তার ধারে বসে পড়ল। এক মুচিকে পেয়ে, তার হাতে একটা সিল করা চিঠি ধরিয়ে দিল। চিঠিটা লেখা হয়েছে দেশের সেনাবাহিনীর প্রধানকে। থানায় নিয়ে যাওয়া হলে, ছেলেটা তোতলাতে তোতলাতে বলল, 'আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই, আমার বাবা তাই চেয়েছিলেন।' কিন্তু নিজের পরিচয় কিছুই বলতে পারল না। তখন চিঠিটা খোলা হল। গোটা গোটা অক্ষরে লেখা, 'আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই, আমার বাবা যেমনটি চেয়েছিলেন'। তারপর অন্য একজনের হাতের লেখায় লেখা ছিল, 'আমি আপনার কাছে এই ছেলেটিকে পাঠাচ্ছি। ওকে আমার বাড়িতে ষোল বছর আগে রেখে যাওয়া হয়েছিল। আমি একজন সাধারন গরিব শ্রমিক, অনেকগুলো ছেলে মেয়েও আছে। তাদের দেখভাল করতে গিয়েই আমি জেরবার। তাই আর আমি ওর ভরণপোষণ করতে পারছি না। আমি ওকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে বাধ্য হলাম। যদি আপনারাও ওর দেখভাল করতে না পারেন, তাহলে ওকে মেরে ফেলতে পারেন বা চিমনি থেক ঝুলিয়ে দিতে পারেন।' চিঠির নিচে কারো নাম সই করা ছিল না। পুলিশ অফিসাররা বুঝলেন, এই ছেলেটার কোন বাবা-মা নেই। নিশ্চয়ই ওকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথবা ছেলেটি কোন অযাচিত বা অবৈধ সন্তান। কে ছিল সেই ছেলেটা? রাজ পরিবারের লোক কেন তার খোঁজ নিতে আসত? ঠিক ষোল বছর আগে রানীর যে পুত্র সন্তান মৃত প্রসব হয়েছিল বলে জানানো হয়েছিল, এ কি সেই? না হলে রানী কেন ছেলেটির কথা জেনে কেঁদেছিলেন? কেনই বা ছেলেটিকে খুন করার জন্য বারবার চক্রান্ত হয়েছিল? শেষ পর্যন্ত কি হল? জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা।

উ-ভয় সংকট

উৎপল একটা বেসরকারি কোম্পানির কলকাতার হেড অফিসে চাকরি করত। স্ত্রী, পুত্র বৃদ্ধা মা নিয়ে সুখের সংসার। কিন্তু হঠাৎ কোম্পানির অর্ডার, মুম্বাই ট্রান্সফার হয়ে যেতে হবে।কিন্তু উৎপল, পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে কি করে যাবে মুম্বাই? প্রিয় শহর কলকাতা ছেড়ে ও কিছুতেই যেতে চাইল না। কাকুতি-মিনতি করা সত্বেও বস রাজি হল না। উল্টে হুমকি দিল ট্রানস্ফার না নিলে, রেজিগনেশন দিতে হবে। উৎপল দুদিন ভাবল, তারপর স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল। মুম্বাইতে গিয়ে ও কিছুতেই থাকতে পারবে না। টাকা পয়সা কিছু জমানো আছে, তার সঙ্গে কিছু টিউশনি করেই ও কোনরকমে সংসার চালিয়ে নেবে। অফিসে গিয়ে ও রেজিগনেশনই দিয়ে দিল। চাকরিটা ছেড়ে দেওয়ার পরেই উৎপলের জীবনটা, দশটা-পাঁচটার রুটিনের বাইরে হয়ে গেল। এই অবসর জীবনটা নিয়ে এবার ও কি করবে, কিছুতেই বুঝে উঠতে পারল না। কারো অত সময় নেই, যে ওর সঙ্গে সময় কাটাবে। সবারই নিজস্ব কাজকর্ম রয়েছে। তখন উৎপল বাড়িতে থাকা পুরনো বইগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করতে শুরু করল। ওর পারিবারিক অনেক বইয়ের সংগ্রহ ছিল, যেগুলো এতদিন ও পড়ে উঠতে পারেনি। সেগুলো ও এবার পড়তে শুরু করল। পড়তে পড়তে ওর মনে হল, এসব কথা তো ওর নিজেরও হতে পারে, নিজে লিখে ফেলতে অসুবিধাটা কোথায়? ও দেখল, টাকা দিলেই কবিতাগুলো ছাপা হয়, সার্টিফিকেট, প্রাইজ পাওয়া যায়। তারপর উৎসাহে ও গল্প লিখতে লাগল।কিন্তু কত আর টাকা খরচ করে সেসব ছাপানো যায়? ওর অনেক টাকা খরচা হয়ে যাচ্ছিল। ওকে বন্ধুরা বুদ্ধি দিল ভুতের গল্প লিখতে। কিন্তু ভূতের গল্প লেখার মত উৎপলের কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না। ও জীবনে ভূত দেখেনি, তিহশে কি করে লিখবে ? তখন ওর বন্ধুরা ওকে বুদ্ধি দিল, কলকাতা সব ভুতুড়ে জায়গাগুলো দেখে আসতে। ঐ সব জায়গায় একা একা রাত কাটাতে। তাহলেই ভৌতিক অভিজ্ঞতা হবে, আর সেইসব নিয়ে ও সহজেই রোমহর্ষক সব ভূতের গল্প লিখে ফেলতে পারবে। উৎপল মনে মনে একটু ভয় পেলেও, শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে গেল। এরপর কি হল জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা।

হিটলারের গুপ্তধন

হোলি গ্রেইল আর অ্যাম্বার রুম কি নাতসীদের লুকিয়ে রাখা
? বড় মামা আর কোকো দুজনে আলোচনা করছিল। কদিন আগেই বড়মামা ঘুরে এসেছেন আর্জেন্টিনায় হিটলারের গোপন ডেরাটা দেখে। জার্মানিতেও গিয়েছিলেন হিটলারের বাঙ্কার থেকে পালানোর রহস্যভেদ করতে। স্ট্যালিন পর্যন্ত বলেছিলেন, হিটলার আত্মহত্যা করেননি, আর্জেন্টিনায় পালিয়ে গেছিলেন। আর্জেন্টিনা পৌছেই হিটলার কি করেছিলেন, যাতে কেউ চিনতে না পারে? ইভা ব্রাউনের সঙ্গে ইনালকো জঙ্গলের প্রাসাদে বহু বছর কাটিয়ে দেন? বড়মামা সেই রহস্যের পেছনে ছুটে বেড়ালেন। হিটলারের গুপ্তধনের সন্ধানে এক্সক্যাভেশনও করেছিলেন। হিটলারের গুপ্তধন কোথায় লুকানো আছে, টপলিটজ লেকের তলা থেকে কি কি পাওয়া গিয়েছিল? সত্যিই কি অনেক দামি দামি সোনার জিনিস উদ্ধার হয়েছিল? বাল্টিক সমুদ্রের গভীর জলের তলায় জার্মান যুদ্ধজাহাজের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে কি লুকিয়ে আছে? কায়সারা সল্ট মাইনে অসংখ্য সোনার বার, মূল্যবান শিল্পবস্তু, পেইন্টিং এসব পাওয়া গেছে। বাকি সোনা কোথায়? জার্মানদের আবিষ্কৃত সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর সব যুদ্ধাস্ত্রড়্ই বা কোথায় গেল? কোথায় লুকানো হিটলারের প্রকৃত গুপ্তধন? জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা।

ড্রপা পাথরের রহস্য

বড়মামা চীন থেকে বেশ কদিন হল দেশে ফিরেছেন। অথচ তারপর থেকে আর কোন খবর নেই। কোকো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল, বড়মামা কোন একটা ঝুটঝামেলায় ফেঁসে গেল না তো। চীনে তো মামার অনেক শত্রু, গুপ্ত দলগুলো কবে থেকে পেছনে লেগে রয়েছে। কোচিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ মোবাইল একটা মেসেজ এলো ওডেসার হুমকি। সঙ্গে একটা মড়ার খুলির ছবি। কোকো বুঝতে পারল, এটা বড়মামাকে উদ্দেশ্য করেই। কিন্তু ওডেসা কেন এভাবে ভয় দেখাচ্ছে ? এসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে বাড়ি পৌঁছোতেই চমক, বসে আছেন বড় মামা। তুমুল আড্ডা চলছে। কোকোকে বড়মামা বলল, এরিয়া ফিফটি ওয়ানের কথা। আগেই বড়মামার মেল থেকে কোকো জানত, চীনে বড়মামার নতুন এক্সক্যাভেশনের কথা। 'ড্রপা পাথরের ব্যাপারটা একটু খুলে বলো না।' 'ওই পাথরগুলো আসলে তৈরি করেছিল ড্রপা বলে এলিয়েনরা।তারা মারা যায় পৃথিবীর আদাবাসীদের সঙ্গে যুদ্ধে। আর ড্রকপা হল এক বিরল প্রজাতির মানুষ যারা বাইরের জগতের থেকে লুকিয়ে থাকে। ওরা হয়তো ঐ এলিয়েনদেরই বংশধর।' কোকোর পড়ায় মন বসে না। বড়মামার থেকে পুরো ব্যাপারটা না জানা ফরাযন্ত। বায়ান হার পর্বতের গুহায় কি দেখেছিল ওদের দল? খুব হাইপ্রিশিসন যন্ত্র দিয়ে সে গুহাটা কারা মসৃণ করে তুলেছিল? চার হাজার বছর আগে মানুষ ওরকম গুহার দেয়াল কাটল কি করে? আর আধুনিক আর্কিটেকচারই বা বানাল কি করে? তখন তো আর এখনকার মত এত আধুনিক সব যন্ত্রপাতি ছিল না! কতগুলো ঢিপি, সেগুলোর মধ্যে মানুষের কবর রয়েছে। কয়েকটা ভেঙে দেখা গেলঅদ্ভুত দর্শন কিছু মানুষের কঙ্কাল, অথচ ঠিক মানুষের মত নয়। ওরা কি এলিয়েন? ইউএফও করে নেমেছিল ওখানে? ড্রপা পাথরগুলোর সুক্ষ সুক্ষ মাইক্রোস্কোপিক চিহ্নগুলি কারা করেছিল? কেনই বা এত লুকোছাপা চাইনিজ গভর্মেন্টের? সত্যিই কি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল কিছু ঘটেছিল? এরপর এলিয়েনদের রহস্য জানতে গেলে পড়তে হবে পুরো গল্পটা।

কার্সার

নয়ের দশকের কলকাতা শহর। তখন মোবাইল বা কম্পিউটার আসেনি, তার বদলে খেলাধুলা, চিঠি লেখা আর আড্ডা-এসবই মেতেছিল উত্তর কলকাতা। সেখানেই সরকার পাড়ায়, অনিন্দ্য আর সন্দীপ দুজন গলায় গলায় বন্ধু, ওদের কথা যেন কোনদিন শেষ হতো না। সন্দীপ ভালোবাসত পত্রালীকে, কিন্তু সে কথা কোনদিন মুখ ফুটে বলতে পারত না। পত্রালি ছিল ওর প্রথম প্রেম, ও মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকত। একটা কোচিংয়ে দুজনের নিয়মিত দেখা হত, এর বেশি কিছু না। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার পর পত্রালীর সঙ্গে দেখা হওয়া বন্ধ হয়ে গেল।একদিন অনিন্দ্য ছুটে এসে একটা দারুন খবর দিল, পত্রালি কোন কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছে। সন্দীপকে ও সেখানে নিয়ে গেল। শর্ত, এবারে কিন্তু প্রথমেই ওকে প্রপোজ করতে হবে। কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে গেলেও সন্দীপ কিন্তু পত্রালীকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারত না। প্রেম যে কি তা ওর পক্ষে বোঝানো কোন মতেই সম্ভব ছিল না। পত্রালীও কোনদিন কিছু বুঝতে পারে। কিন্তু একদিন সন্দীপ সাহস করে কী করল? তারপর কী হল? অনিন্দ্য কেন বিদায় নিল পৃথিবী থেকে? বাকিটা জানতে গেলে পড়তে হবে দুই বন্ধুর অমর বন্ধুত্ব আর এক চিরকালীন প্রেমের উপন্যাস 'কার্সার'।