আমি আবেগ ও অনুভূতিপ্রবণ,ভাবুক আর সৃষ্টিশীল।জীবনের চলা,ওঠাপড়া আর অভিজ্ঞতা নিংড়োনো এই সব লেখা ।এ আমার পাগল মনের নিঃশেষিত প্রকাশ।
27 October 2020
স্যুইট নং ১১
একটা গাড়ি পড়েে আছে এয়ারপোর্টের পার্কিং লটে।নেমপ্লেটে লেখা REVENGE.জানা গেল গাড়িটা ফিল্মস্টার অনিরুদ্ধ চৌধুরীর।কিন্তু উনি কোথায়, কেউ বলতে পারল না।গাড়িটার কি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল?সৌরনীল নিজে নিশ্চিত
কি যে হল ফিল্মস্টার ভদ্রলোকের?
সৌরনীল বলল, 'গাড়িটা অ্যাক্সিডেন্টের পর কে এত দূরে চালিয়ে নিয়ে এল, এটাই আমার অদ্ভুত লাগছে।'
'কেন? নিশ্চয়ই ওনার বা ড্রাইভারের কারো তেমন চোট লাগেনি, তাই চালিয়ে নিয়ে চলে এসেছেন।'
'সে তো হতেই পারে, কিন্তু এয়ারব্যাগগুলো তো চুপসোনো অবস্থায় এখনো লেগে আছে। এত তাড়া, যে পাল্টে নেওয়ারও সময় হল না!'
'তাইতো! ঠিক বলেছ। এটা তো আমি খেয়াল করিনি।'
'কিন্তু সবার আগে জানা দরকার, অ্যাক্সিডেন্টটা কোথায় হয়েছিল।' সৌরনীল হেসে বলল।
হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে বেশ উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় হাজির হল অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জীর ড্রাইভার তিনকড়ি পাত্র। ওকে জেরা করতে শুরু করলেন রাঘববাবু।
'অনিরুদ্ধবাবু কোথায়?'
'আজ্ঞে, উনি তো শুটিং করছেন।'
'কোথায়? ফোনে তো পাওয়া যাচ্ছে না!'
'দার্জিলিঙে।'
'লাস্ট কবে ওনার সঙ্গে তোমার দেখা হয়েছে?'
'আজ্ঞে দিন পনেরো আগে,দার্জিলিঙেই।'
'তারপর? তুমিই তো ওনার গাড়ি চালাতে। ওকে রেখে দিয়েই চলে এলে?'
'সাহেব যে আমাকে ট্রেনে চলে যেতে বললেন।' ঢোঁক গিলে বলল তিনকড়ি।
'তা গাড়িটা কই?'
'সাহেবের কাছে।'
'তাই নাকি? তা কবে ফিরলে তুমি?'
'গত মাসের সাতাশ আঠাশ তারিখ হবে।'
' তারপর আর ওনার কোন খবর পেয়েছ? বা ফোনে কথা হয়েছে?'
'না স্যার।'
'তাহলে তুমি কি করে জানলে যে উনি ওখানে শুটিং করছেন?' কড়া ভাবে বলেন রাঘববাবু।
'আমি না স্যার। মেমসাহেবই তো বললেন, উনি শুটিংয়ের কাজে ব্যস্ত আছেন। তাই..'
'আর তুমি? তুমি কিছু জানতে না?' ড্রাইভারকে ধমকান রাঘববাবু।
'আমি তো রোজই হাজিরাতে আসি হুজুর। সাহেব নেই বলে কিছুক্ষণ বসে থাকি। তারপর মেমসাহেব বলেন চলে যেতে, তাই বাড়ি চলে যাই।'
'আর সাহেবের গাড়ি যে এয়ারপোর্টের পার্কিং লটে পড়ে আছে সেটা জানতে না?'
'সে কি? গাড়ি নিয়ে সাহেব কলকাতা চলে এসেছেন? আমি জানতাম না তো। মেমসাহেবও তো বলেননি।'
'ন্যাকামি হচ্ছে? ঠিক করে বল, তোমার সাহেব এখন কোথায়?'
'জানি না স্যার। বিশ্বাস করুন।'
'দার্জিলিঙে আর কে কে ছিল তোমাদের সঙ্গে?'
'আর কেউ না স্যার।'
'সাহেবের গাড়ির অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল, সেটা জান?'
'কই জানি না তো?' হাঁকপাঁক করে উঠল তিনকড়ি।
'গাড়ি এখানে আর তোমার সাহেব দার্জিলিঙে শুটিং করছেন! যতসব গাঁজাখুরি বলতে এসেছ?', ধমকে উঠলেন রাঘববাবু।
'বিশ্বাস করুন স্যার।আমি কিচ্ছু জানি না, সত্যি বলছি।'
'আচ্ছা তোমার সাহেবের সঙ্গে মেমসাহেবের ফোনে কথাবার্তা হয়?'
'জানি না স্যার। তবে মেমসাহেব বললেন, সাহেব দার্জিলিংয়েই রয়েছেন। আমিও সেটাই বিশ্বাস করলাম।'
'ও তাই বুঝি? তা মেমসাহেবকেই বা ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? উনি কোথায় আছেন?'
'আজ্ঞে বাড়িতেই আছেন। লেক গার্ডেন্সে।'
আবার মিসেস চ্যাটার্জিকে ফোন লাগানো হল, কিন্তু এবারেও সুইচড অফ। 'নাঃ, বেরোতেই হবে দেখছি', বলে রাঘববাবু তিনকড়িকে গাড়িতে উঠতে বললেন। সৌরনীলকেও সঙ্গে যেতে অনুরোধ করলেন, ফেরার পথে ওর বাড়িতে নামিয়ে দেবেন। দুজন পুলিশ কনস্টেবলকেও তিনকড়ির ওপর নজর রাখার জন্য নিয়ে নেওয়া হয়। যেতে যেতেই রাঘববাবু ফোন করলেন দার্জিলিং থানার ওসি তাপস অধিকারীকে। উনি কনফার্ম করলেন যে ওখানে কোন শুটিং হচ্ছে না, আর ফিল্মস্টার অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জীও ওখানে নেই। কলকাতা ফিরে গেছেন বেশ কিছুদিন আগে। রাঘববাবুর কপালে ভাঁজটা গভীর হল। পাশে বসা সৌরনীলকেও কথাটা ফিসফিস করে বললেন। সৌরনীলও বেশ অবাক হল। অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জী যদি গাড়ি নিয়ে কলকাতা ফিরলেনই, তাহলে নিজের বাড়ি গেলেন না কেন? তিনকড়িকেই বা আগেভাগে ট্রেনে করে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন কেন! আর তারপর গাড়িটা এয়ারপোর্টের পার্কিং লটে রেখে, নিজে বেপাত্তাই বা হয়ে গেলেন কেন? ওনার কোন বিপদ আপদ হয়নি তো? অ্যাক্সিডেন্টের ধাক্কা তো সামলে নিয়েছিলেন বলেই মনে হচ্ছে। কোন চোট লাগার চিহ্ন পর্যন্ত নেই গাড়ির ভেতরে, এয়ারব্যাগও খুলেছিল ঠিকঠাক। তারপর এতটা চালিয়ে নিয়ে চলেও এলেন। তবু ঘটনাগুলোর কোন থই পাওয়া যাচ্ছে না।
আর একটা বিষয় ভাববার। মিসেস চ্যাটার্জীই বা এতদিন ধরে কেন মিথ্যে বলেছিলেন, যে উনি দার্জিলিঙে শুটিং করছেন? কেনই বা উনি গোপন রাখছিলেন অনিরুদ্ধবাবুর রহস্যজনক অন্তর্ধান? ব্যাপারটা বেশ গোলমেলে।
লেক গার্ডেন্সের অভিজাত ফ্ল্যাট বাড়িটায় পৌঁছে, সৌরনীল আর রাঘববাবু তড়িঘড়ি উঠে গেলেন সাততলায়। দরজা নক করতে কাজের একটা মেয়ে দরজা খুলল। পাশে আরও একটা কাজের মেয়ে দাঁড়িয়ে। পুলিশ দেখেই ওরা ভয়ে দরজা ছেড়ে দিল। 'মিসেস চ্যাটার্জী কোথায়?', রাঘববাবু বলতে মেয়েটা একটু ঘাবড়ে গিয়ে বলল, 'মেমসাহেব ঘুমোচ্ছেন, ওনার শরীর খারাপ।'
'কি হয়েছে?'
'জানি না।'
'ডাক্তার দেখিয়েছিলে?'
'হ্যাঁ', বলে ডেস্কের উপর থেকে একটা প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওনার হাতে দেয়। রাঘববাবু দেখলেন, সাইকোলজিস্ট ডঃ অসীম রায়ের প্রেসক্রিপশন, কলকাতার নামজাদা ডাক্তার। দেখা গেল, কিছু ঘুমের ওষুধ লিখে গেছেন। আরও অন্য কিছু নার্ভের ওষুধ।
'ম্যাডাম দিনে কতক্ষণ ঘুমোন?'
'এই চোদ্দো পনেরো ঘন্টা মত।'
'এখন কখন শুয়েছেন?'
'এই তো জলখাবার খেয়ে, ওষুধ খেয়ে শুলেন। এক ঘন্টাও হয়নি।'
'ও ঠিক আছে ,পরে ওনাকে ইন্টারোগেট করব। তোরা দুজন এখানে বোস।',বলে সোফাটা দেখিয়ে দেন।
ওদিকে সৌরনীল ততক্ষণে সব ঘুরেফিরে দেখে নিচ্ছে। বিশাল সাজানো ফ্ল্যাট, সবদিকে বৈভবের ছাপ সুস্পষ্ট। দুজন কাজের লোকই সব সামলায় বোঝা গেল।
রাঘববাবু জিজ্ঞাসা করলেন, 'তোদের সাহেব কোথায় জানিস কিছু?'
দুজন কাজের লোক একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে বলল, 'না স্যার, আমরা কিছুই জানিনা। মেমসাহেব বললেন সাহেব দার্জিলিংয়ে শুটিং করছেন।'
'সাহেব ফোন করতেন?'
'জানিনা, মেম সাহেব জানেন।'
'দার্জিলিং কবে গেছিলেন সাহেব?'
'গত মাসে।'
'আর কে গেছিলেন সঙ্গে?'
'আর কেউ না, সাহেব একাই নিজের গাড়িতে গেছিলেন।'
'ড্রাইভার কে ছিল, তিনকড়ি?'
'হ্যাঁ', দুজনে মাথা নেড়ে কাঠের পুতুলের মত বলে যাচ্ছিল। বোঝাই যাচ্ছে, শেখানো বুলি আওড়াচ্ছে।
'সাহেব কবে ফিরলেন কলকাতা?', ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলেন রাঘববাবু।
'আজ্ঞে সাহেব তো এখনো ফেরেননি।'
'তাই নাকি? চল, তোদের থানায় নিয়ে যাচ্ছি।'
মেয়ে দুটো কেঁদেকেটে বলল, 'এর বেশি কিছু জানি না স্যার। আমাদের ছেড়ে দিন।'
'তোদের ব্যবস্থা পরে করছি।', বলে রাঘববাবু বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে। সৌরনীল বলল,'চলুন রাঘবদা, ঘরগুলো আরো একটু ভাল করে দেখি।' সৌরনীল ঘুরেফিরে সব দেখতে লাগল। পুরনো কাগজ, ম্যাগাজিন রাখার তাকগুলো ঘেঁটে কি সব দেখল। জুতোর তাক দেখল, ফ্রিজ খুলে দেখল, বইপত্র, নোটপ্যাড, ওষুধের স্ট্রিপ এমনকি অনিরুদ্ধবাবুর আলমারি পর্যন্ত ঘেঁটে দেখল। তারপর চলে গেল ম্যাডামের বেডরুমে। পর্দা সরিয়ে বাইরে থেকে দেখল, ম্যাডাম খাটের এককোনে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন। ঘর অন্ধকার, ফুলস্পিডে এসি চলছে। সৌরনীল মেয়েদুটোকে বলল ঘরের আলো জ্বেলে, এসি নিভিয়ে দিতে আর দরজা জানালা সব খুলে দিতে। ঘরটা একটু আলোকিত হয়ে স্বাভাবিক হলে, সৌরনীল ওদের ম্যাডামকে ডাকতে বলল। অনেক কষ্টে ম্যাডামকে ডেকে তোলা গেল। অত্যন্ত সুন্দরী মহিলা, কিন্তু চোখের তলায় চিন্তায় কালি পড়েছে। ঘুম চোখে উঠে উনি মেয়েদুটোকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে লাগলেন। তারপর পুলিশ দেখে একটু থমকে গিয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসে রইলেন। 'নমস্কার মিসেস চ্যাটার্জী, আমরা এয়ারপোর্ট থানা থেকে আসছি, মিস্টার অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জীর নিখোঁজ হবার তদন্ত করতে। একটু ঘরে ঢুকতে পারি?', সৌরনীল বলল। মিসেস চ্যাটার্জীর মুখের পেশিগুলো একটু যেন কেঁপে উঠল, একটু ধাতস্থ হয়ে বসে উনি বললেন, 'অনিরুদ্ধ নিখোঁজ কে বলেছে আপনাদের?' 'তাহলে উনি কোথায়? আপনি বলুন।', সৌরনীল বলল। 'উনি তো শুটিংয়ের কাজে দার্জিলিংয়ে আছেন', আবার সেই ভাঙা রেকর্ড বাজালেন ম্যাডাম।
'আর কত মিথ্যে বলবেন? আমরা খবর নিয়ে জেনেছি, উনি দার্জিলিং ছেড়ে গত মাসেই কলকাতা চলে এসেছেন। আপনি জানেন না?'
ভদ্রমহিলা একটু যেন চমকে উঠলেন। বললেন, 'না তো! আমাকে যে ফোনে বলল, ও দার্জিলিংয়েই আছে।'
'কবে কথা হয়েছিল আপনার সঙ্গে?'
'রোজই তো হয়। গতকালও হয়েছিল।'
'কই, দেখি আপনার ফোনটা।'
ম্যাডাম বালিশের পাশে থেকে বাধ্য হয়ে মোবাইলটা বের করে অন করে, লক খুলে, ওদের হাতে দিলেন।
'এ কি? এ তো দেখছি গত মাসের কুড়ি তারিখের পর থেকে কোন কল রেকর্ডসই নেই। কেন জানতে পারি?'
'আমি জানি না। আমার কিছু মনে থাকে না।', ম্যাডাম দিশাহারা হয়ে হিস্টিরিয়া গ্রস্থের মতো আচরণ করতে থাকলেন।
'তাহলে বললেন যে, উনি গতকালই ফোন করেছেন?', সৌরনীল ছাড়বার পাত্র নয়।
'আমি কিছু জানিনা, আমার শরীর খারাপ। আমাকে ছেড়ে দিন।', ভদ্রমহিলা পাগলের মত করতে লাগলেন। সৌরনীল এসব অভিনয় অনেক দেখেছে।বলল, 'আপনি ডাক্তার দেখিয়েছেন?'
'হ্যাঁ, ওনার ওষুধ খেয়েই তো ঘুমাচ্ছিলাম।'
'মিস্টার চ্যাটার্জী দার্জিলিং থেকে কবে কলকাতা ফিরলেন?'
'আমি জানি না।', এবার রেগে উঠে বললেন মহিলা। সৌরনীল বুঝল এ বড় কঠিন ঠাঁই। সঙ্গে মহিলা পুলিশও নেই, জোর করার উপায় নেই। কোনো প্রমাণও নেই ওনার বিরুদ্ধে, খালি একটা সন্দেহ। তার ওপর এরকম সাইকোলজিক্যাল পেশেন্ট। যখন-তখন পাগল সাজবে। বড় সেয়ানা মহিলা। এখন আর কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন লাভ হবেনা। তবু বলল, 'মিঃ চ্যাটার্জীর আর কোন নাম্বার আছে?'
'না'
'ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ করতেন?'
'ফেসবুক প্রোফাইল আছে একটা', গম্ভীরভাবে বললেন ভদ্রমহিলা।
'উনি যে এখন কলকাতায়, তা জানেন?'
'না তো। ওর গাড়ি কোথায়, ও কোথায়, আমি কিচ্ছু জানি না। বললাম তো, আমার কিছুই মনে থাকেনা। ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাই। আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ।', শেষ কথাগুলো এত মিষ্টি করে বললেন ভদ্রমহিলা, যে সৌরনীল আর কোন কিছুই বলতে পারল না। কিন্তু নিজের থেকে উনি গাড়ির কথা তুললেন কেন! সন্দেহটা নিয়েই বাধ্য হয়ে, ওরা উঠে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এল। সৌরনীল রাঘববাবুকে বাইরে এসে চুপিচুপি বলল, 'রাঘবদা, আপনি এদিকটা দেখুন। আমি কালই একবার দার্জিলিং রওনা হয়ে যাই। আমার মনে হচ্ছে রহস্যের সূত্র ওখানেই রয়েছে। ওখানকার লোকাল থানায় একটু বলে দেবেন। অ্যাক্সিডেন্টের স্পটটাও দেখতে হবে। তাছাড়া উনি কোথায় কোথায় গেছিলেন, কি করেছিলেন, সাতাশে মার্চ তিনকড়িকে ট্রেনে চাপিয়ে দিয়ে তারপর কি করলেন, সব আমাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করতে হবে। না হলে অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জীর অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা কিছুতেই করা যাবে না। কেসটার আগাপাশতলা কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না।'
'ঠিক বলেছ সৌরনীল, বিদঘুটে কেস। তাহলে তাই কর, আমি ওখানকার ওসি তাপসদাকে সব বলে দিচ্ছি, কোন অসুবিধা হবে না। তুমি কালই চলে যাও।'
'কিন্তু এখানকার ব্যাপারটা? আমার মনে হচ্ছে ড্রাইভার তিনকড়ি আর কাজের মেয়েদুটো কেউ সত্যি কথা বলছে না। ওদের থানায় ডেকে আরো ইন্টারোগেট করতে থাকুন, নজর রাখুন। পালাতে যেন না পারে।'
'সে নয় হল। কিন্তু তুমি কি করে বুঝলে যে ওরা মিথ্যে বলছে?'
'পুরনো কাগজ রাখার তাকটা ভাল করে দেখে বুঝলাম, মার্চের কুড়ি থেকে সাতাশ কেউ এ বাড়িতে কাগজগুলো খুলেও দেখেনি। অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জী না হয় ছিলেন না, কিন্তু মিসেস চ্যাটার্জী সে সময় কি করছিলেন, যে কাগজ পড়ারও সময় পাননি? অথচ তার পরের কাগজ গুলো সব পড়া বোঝা যাচ্ছে। আমার মনে হয় উনিও একই সঙ্গে দার্জিলিং গেছিলেন।আজ আমাদের দেখে ভালই অ্যাক্টিং করলেন।'
'তাহলে মিসেস চ্যাটার্জীকে আরেকবার বাজিয়ে দেখলেই হয়।'
'এখন না। এখন ওনাকে বিরক্ত করার দরকার নেই, তবে নজরে রাখুন। আর ওর মোবাইলের কল রেকর্ডস আর টাওয়ার লোকেশনগুলো আমাকে দেবেন।', বলে সৌরনীল বেরিয়ে লিফটের দিকে এগিয়ে গেল।
(এরপর রহস্যের ঘনঘটা জানতে পুরো গল্পটা পড়তে হবে)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment