20 May 2020

নেওয়ারি খুলিরহস্য


(রহস্য উপন্যাস-সারসংক্ষেপ)
সোহম তার বন্ধু ঋষিতকে গিফ্ট দেওয়ার জন্য অ্যান্টিক শপ থেকে একটি লাপিস লাজুলির খুলি কেনে।খুলিটা অদ্ভুত, উপরে নানারকম সংকেত খোদাই করা। ওদেরই আরেক বন্ধু সুমন্ত্র ওটা কেনার জন্য প্রলুব্ধ হয়ে ওঠে। ঋষিতের বাড়িতে খুলিটা নিয়ে নানা রকম অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে ।ও ভয়ে খুলিটা ফেরত দিয়ে দেয় সোহমকে। সুমন্ত্র খুলিটার জন্য টাকা অফার করে, সোহম রাজি হয়না। মেজকাকাকে সোহম খুলিটা দেখায়। মেজকাও বলে নেওয়ারি লামাদের টোটেম এটা ,খুবই দামী এবং অদ্ভুত।রন্জনা লিপি ও সাংকেতিক মন্ত্রগুলো অন্ধকারে সবুজ আলোতে জ্বলে। নানা রকম টেস্ট করার ব্যবস্থা হয়।খুলিটার রহস্য বুঝতে দুজনে আপ্রাণ চেষ্টা করে। ফেরার পথে সোহমের একটা হুমকি ফোন আসে,গুন্ডাটা খুলিটা দিয়ে দিতে ব'লে। ট্যাক্সিতে উঠে ও বিপদে পড়ে। খুলিটার জন্য  ট্যাক্সিওয়ালা আক্রমন করে।বাঁচতে ট্যাক্সি থেকে লাফ দিয়ে ও প্রাণে বেঁচে যায়।মেজকাকে বাঁচাতে, সে রাত ও মেজকার বাড়িতেই থেকে যায়।নানা সন্দেহজনক মানুষের উপস্থিতি, আশঙ্কাতে ওরা দুজনে সারারাত জেগে পাহারা দেয়।অনেক পড়াশোনা, নেট-বই ঘাঁটাঘাঁটিও ক'রে, বুঝতে পারে এটা তিব্বতি লামাদের তন্ত্র-মন্ত্রের আচার ব্যবহারে দেবতাকে নৈবেদ্য দেবার খুবই পবিত্র জিনিস। কিন্তু লামার খুলিটা কি পাথরের  ভেতরে আছে,খটখট শব্দ হচ্ছে কেন নাড়ালে?আর খোদাই-করা লিপিগুলোর মাঝখানে একটা সাদা দাগ কেন ? লিপির পাঠোদ্ধারও করতে পারেনা কেউ। রেফার করা হয় লন্ডনের কোর্টাল্ড ইন্সটিটিউটে। পরের দিন আবার হুমকি ফোন আসে সোহমের । এবার সোহম বুঝে যায় যে ফোনটা সুমন্ত্র  করছে।ও মাথা নত করে না,ওর এক সিআইডির বন্ধুকে ব্যাপারটা জানিয়ে দেয় ।মেজকার সঙ্গে সোহম যায় প্রথমে ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম।সেখান থেকে ফেরার পথে গার্ড বলে আপনাদের ব্যাগটা একজন পাল্টিয়ে নেবার চেষ্টা করেছিল । আর্কিওলজিক্যাল সার্ভেতে থ্রিডি স্ক্যান ,কার্বন ডেটিং করতে যায়।কিউরেটর,আর্কিওলজিস্ট সবাই বলে খুলিটা দারুন মূল্যবান, মিউজিয়ামে ডোনেট করে দিতে ।স্ক্যানে ধরা পড়ে পাথরের খুলিটার মধ্যে আরও একটা সত্যি কারের মড়ার খুলি আছে। বৌদ্ধ লামার কি? কিন্তু পূর্ণবয়স্ক মানুষের খুলি এত ছোট হল কি ক'রে? কয়েকজন আড়ালে যেন ফলো করে ওদের।এরপর ওরা যায় ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে ।সেখানে জানতে পারে এটা মেডিসিন বুদ্ধের মন্ত্রঃপূত খুলি। ওদিকে পুলিশের ধাতানি খেয়ে, সুমন্ত্র ফোন করে ক্ষমা চেয়ে নেয়। সোহম খুলিটা নিজের বাড়ি নিয়ে আসে ।তখনই শোনে ওর ছেলেকেও স্কুল থেকে কিডন্যাপ করার প্ল্যান করেছিল সুমন্ত্র। সোহম খুলিটার ওপর গোল সাদা স্পটটায় একটা কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাত করতে 'ওঁ' শব্দ বের হয়। স্ক্যান রিপোর্ট  বলে, এটা পাঁচশো বছরের পুরনো পূর্ণবয়স্ক লামার খুলি।কিন্তু খুলি বা দেহ ছোট করার কি গুপ্তবিদ্যা জানা ছিল নেওয়ারি লামাদের?ওদিকে, ঋষিত ফোন করে জানায় ওকেও হুমকি দিয়ে ফোন করেছিল কেউ। পরের দিন মেজকার বাড়িতে গিয়ে সোহম  লন্ডন থেকে ডক্টর ব্যাংক্রফ্টের মেল পায়। লিপিটার পাঠোদ্ধার করে,জানা গেছে এই লিপি ওষুধ সংক্রান্ত। রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য বৈশর্য্যতন্ত্রের মন্ত্র খোদাই করা।একশো আট বার মন্ত্রপাঠ,খুলিতে আঘাত করে 'ওঁ' শব্দের প্রক্রিয়ার পর সেই মন্ত্রঃপূত জল পান করলে, ভাইরাল ফিভার সেরে যাবে ।সদবীর নিলামে দশ হাজার পাউন্ড দাম ওঠার কথা খুলিটার ।ব্রিটিশ মিউজিয়ামও চেয়ে পাঠায়। কিন্তু সোহম ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামেই ডোনেট ক'রে দেয়। দেবার মুহূর্তে সুমন্ত্র ঘরে ঢোকে। বলে এতদিনেও আসল জিনিসটা ধরতে পারেনি কেউ।খুলিটা মাটি থেকে একহাত ওপরে রেখে, মাঝের গোল জায়গাটায় একশো আট বার আঘাত করে সুমন্ত্র। করতেই খট্ করে পাথরের খুলিটা আড়াআড়ি খুলে যায়,আর ভেতরের আসল লামার মন্ত্রঃপূত খুলিটা বেরিয়ে আসে।এটা দিয়েই প্রক্রিয়াটা করার কথা।সোহম বুঝতে পারে সুমন্ত্রও কম যায় না।ওদের মিটমাট হয়ে যায়।

No comments:

Post a Comment